মন্দির ভাংচুরের মামলা করে বিপাকে ছাতকের সংখ্যালঘুরা




সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার তাতিকোনা এলাকায় গত ১০ মে কালীমন্দির ভাংচুর ও হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বসতবাড়িতে হামলার ঘটনায় মামলা করে বিপাকে পড়েছেন বাদী ও তার পরিবারের লোকজন। মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করছে না। আসামিদের প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকিতে এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন- এমন অভিযোগ তুলেছেন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন।

আজ মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাতিকোনা কালীমন্দির প্রাঙ্গণে এক সভায় নিরাপত্তাহীনতাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।

বক্তারা বলেন, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে ১০ মে রাতে তাতিকোনা এলাকার একটি গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে কালীমন্দির ভাংচুরসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের বসতবাড়িতে প্রবেশ করে নারী-পুরুষদের নির্বিচারে মারধর করেছে। ঘটনার পর পরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, এএসপি সার্কেল, ওসিসহ উপজেলা পর্যায়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরদিন সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। জড়িতদের নাম উল্লেখ করে ছাতক থানায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়। কিন্তু আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক হওয়ায় বাদীপক্ষ সুবিচার পাওয়া নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছেন। বাদী ও বাদীর স্বজনদের প্রকাশ্যে হুমকি-ধমকি দেওয়ার ঘটনায় গত ১৪ জুন তাতিকোনা এলাকার পিপলু দাস ছাতক থানায় জিডি করতে গেলে পুলিশ তার জিডি নেয়নি। পরে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার কার্যালয়ে গিয়ে ১৭ জুন পিপলু দাস এবং একই ঘটনায় ১৮ জুন সন্টু দাস পৃথক দু'টি জিডি করলেও আইনি কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ অবস্থায় মামলার বাদীসহ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের ওপর হামলাসহ আসামিরা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটাতে পারে বলে তারা মনে করছেন। এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুবিচার পাওয়ার প্রত্যাশায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।

এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, তাতিকোনা এলাকায় আসন্ন শারদীয় উৎসব পালন করা নিয়ে তারা শঙ্কিত রয়েছেন। মামলার আসামি ও প্রভাবশালী গোষ্ঠীর ভয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকেই এখন বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিষয়টি মানবেতর হওয়ায় আসামিদের গ্রেপ্তার এবং দেশের প্রচলিত আইনে বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানান বক্তারা।

মুক্তিযোদ্ধা স্বরাজ কুমার দাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন, মুক্তিযোদ্ধা কেতকী রঞ্জন চৌধুরী ভানু, ব্যবসায়ী কালীকান্ত দাস, বাবুল চৌধুরী, শিক্ষক প্রনব দাস, রিপন ভট্টাচার্য্য, মিটু রমেন্দ্র নারায়ন দাস, রথীন্দ্র কুমার দাস, দিপু ভট্টাচার্য্য, অঞ্জন দাস, নুপুর দাস, পবলু দাস, রবি মালাকার, দুলাল চক্রবর্ত্তী, দীনবন্ধু সরকার, দিগই মালাকার, ভানু লাল দাস, শীতেষ মালাকার, বিলাস চক্রবত্তী, প্রদীপ দাস, অবনী মোহান দাস, সন্দীপ বৈদ্য, শ্যাম দাস, গোবিন্দ মোহান সরকার, হিরু দাস, অপু চন্দ্র শীল, অনিক কর্মকার,অসীম কর, অমর কর, ময়না দাস, তাপস দাসসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের শতাধিক মানুষ।

সূত্রঃ সিলেট মিরর   


Post a Comment

0 Comments