পরিশুদ্ধ বাঙ্গালী গঠনে রবীন্দ্র চর্চার কোন বিকল্প নেই



যীশু সেন, স্টাফ রিপোর্টার ঃ আমার প্রাণের মানুষ আছে প্রাণে, তাই হেরি তাই সকলখানে। আছে সে নয়ন তারায়, আলোক ধারায়, তাই না হারায়, ওগো তাই দেখি তাই যেথায় সেথায় তাকাই আমি যেদিক পানে...। একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, রবীন্দ্রনাথ বিশ্বের সকল বাঙ্গালীর হদয় স্থান করে নিয়েছেন শুধু তার সৃষ্টিকর্মের মধ্য দিয়ে। তা সে গানে হোক, কবিতার হোক নাটক উপন্যাস, চিত্রকলা সবর্ত্রই তিনি বিরাজমান। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনাচরণে রবীন্দ্রনাথকে পাই যেন বড্ড আপন করে। রবীন্দ্রনাথ বিনে আমাদের চলার জো নেই।রবীন্দ্রনাথ যেন আমাদের নিত্য সঙ্গী। আজ আমরা রবীন্দ্র চর্চা থেকে কিছুটা হলেও দূরে সরে এসেছি বলেই সমাজে আজ অত অনাচার এত অবক্ষয়। এই সামাজিক অবক্ষয় থেকে মুক্তি পেতে আমাদের প্রয়োজন নিয়মিত রবীন্দ্র চর্চা করা। আমরা মনে করি পরিশুদ্ধ বাঙ্গালী গঠনে রবীন্দ্র চর্চার কোন বিকল্প নেই। গত ১৫ নভেম্বর শুক্রবার চট্টগ্রাম নন্দনকাননস্থ ফুলকি এ কে খান মিলনায়তনে বাংলাদেশ রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী সংস্থা চট্টগ্রাম বিভাগীয় শাখার আয়োজনে "রবীন্দ্রসংগীত সন্ধ্যা " অনুষ্ঠান। আবৃত্তি শিল্পী অরুণ ভদ্র এর সঞ্চালনায় শুরুতেই সমবেত সঙ্গীত ' আকাশ ভরা সূর্য্য তারা বিশ্বভরা প্রাণ '। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী শাশ্বতী তালুকদার, প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশন সদর দপ্তরের বার্তা বিভাগের উপ-মহাপরিচালক অনুপ কুমার খাস্তগীর, সম্মানিত অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্রের জেনারেল ম্যানেজার নিতাই কুমার ভট্টাচার্য। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সংস্থা চট্টগ্রাম বিভাগীয় শাখার সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী লাকী দাশ, বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের প্রধান সমন্বয়কারী কেশব জিপসী, রবীন্দ্রসংগীত সন্ধ্যা আসরে একক গান শুনিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেন যারা শিল্পী শেলী মল্লিক এর পরিবেশনায় ছিল ' কে যাবি পারে ওগো তোরা কে,' 'এই তো তোমার প্রেম ওগো হদয় হরনো', 'এই তো তোমার আলোক ধেনু ', 'আরো কতদূরে আছি সে আনন্দধাম'। শিল্পী মুন্নি চক্রবর্তী শোনালেন ' ঘরেতে ভ্রমর এলো গুণগুণিয়ে', 'আমি বহু বাসনায় প্রাণপ্রণে চাই,' 'তোমায় চেয়ে আছি বসে পথের ধারে সুনয়নে', 'যখন এসেছিলে অন্ধকারে চাঁদ ওঠেনি'। শিল্পী শম্পা লোধ তিনি গাইলেন ' গানেরো ভেলায় বেলা অবেলায়', 'ছিন্ন পাতার সাজাই তরণী একা একা করি খেলা', 'রোদনো ভরা এ বসন্ত সখী কখনও আসেনি বুঝি আগে'। শিল্পী পলাশ মজুমদারেরর গাওয়া প্রথম গানটি ছিল ' আমি কী বলে করিব নিবেদন'। এরপর তিনি পরিবেশন করেন ' এ মনিহার আমায় নাহি সাজে ', ' তুলি সন্ধ্যার মেঘমালা, তুমি আমার সাধের সাধনা' এবং ' রাত্রি এসে যেথায় মেশে দিনের পারাবারে'। তাঁর গানে মুগ্ধতার আবেশ ছড়িয়ে পড়ে মিলনায়তন জুড়ে। শিল্পী মনি আচার্য্য গাইলেন ' হার মানা হার পরাবো তোমায় গলে', ' ধুসরো জীবনেরো গোধুলীতে,' ' নিবীড়ো ঘনো আঁধারে চলিছে ধ্রুবতারা,' 'এমনি করে যায় যদি দিন যাকনা'। সুরেলা কন্ঠে গান শুনিয়ে দর্শকদের আবেগে ভাসালেন। সবশেষে শিল্পী বহ্নিশিখা রক্ষিত গাইলেন ' আমার জ্বলেনি আলো অন্ধকারে ', 'সুখে আমায় রাখবে কেন', ' যদি এ আমার হদয় দূয়ারে', ' তোমার কাছে শান্তি পাবো না'। যন্ত্রাণুসঙ্গে ছিলেন কী-বোর্ডে সৃজন রায়, বেহালায় শ্যামল দাশ, মন্দিরাতে মো. ফারুক, তবলায় ত্রিদিপ বৈদ্য ও প্রদীপ নন্দী। পরিশেষে সঞ্চালক বলেন আমরা চাই রবীন্দ্র চর্চা আরো বিস্তৃত হোক, আরো বেগবান হোক,আলোয় আলোয় ভরে উঠুক এ ভুবন। আবৃত্তি শিল্পী অরুণ ভদ্রের বাহুল্যবর্জিত উচ্চারণ ও সুন্দর পরিবেশন প্রশংসাযোগ্য এবং ৬ জন শিল্পীর গানের শ্রোতা সকলেই সুরের মূর্চ্ছনায় আচ্ছন্ন হন।

Post a Comment

0 Comments