১২ জানুয়ারী পরম শ্রদ্ধেয় স্বামীজির জন্মদিন। আসুন জেনে নেই তাঁর সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।


ডেস্ক নিউজ : ১২ জানুয়ারী পরম শ্রদ্ধেয় স্বামীজির জন্মদিন। আসুন জেনে নেই তাঁর সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য।

১)‌ একবার বারাণসীর রাস্তায় স্বামী প্রেমানন্দকে নিয়ে ঘুরছেন স্বামীজি। সেইসময়ে কিছু বাঁদর তাঁদের তাড়া করে। স্বামীজি দৌড়তে শুরু করলে একজন চেঁচিয়ে তাঁদের দাঁড় করান। বিবেকানন্দ ঘুরে দাঁড়ালে বাঁদরের দলও হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। পরে এই ঘটনা ব্যাখ্যা করে স্বামীজি বলেছিলেন, সমস্যা হলে তার মুখোমুখি হতে হবে। সমস্যা থেকে পালিয়ে গেলে সমাধান হবে না। সাহসের সঙ্গে সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে।

৩. স্বামীজি একবার ঠিক করেন সকলের থেকে চেয়ে খাওয়া বন্ধ করবেন। সেই কারণে স্বামীজি খেতে চাইছেন না। দুপুর গড়িয়ে গিয়েছে। খিদেয় ছটফট করছেন। হঠাৎ একজন পিছন থেকে ডাক দিলেন মহারাজ বলে। স্বামীজি না দেখেই সামনে ছুট লাগালেন। সেই ব্যক্তিও ছুটে চলেছেন। কিছুটা যাওয়ার পরে তিনি বললেন, মহারাজ, দয়া করে খাবার গ্রহণ করুন। চোখ ভিজে এল স্বামীজির। তিনি বুঝতে পারলেন ঈশ্বর তাঁর প্রতি সহায় রয়েছেন।

৪.হরিদ্বার যাওয়ার সময় শরৎচন্দ্র গুপ্ত নামে এক অ্যাসিস্ট্যান্ট স্টেশন মাস্টারের সঙ্গে দেখা হয়। স্বামীজির চোখ দেখেই শরৎ বুঝতে পারেন ইনি কোনও সামান্য ব্যক্তি নন। বিবেকানন্দকে সঙ্গ দেওয়ার ইচ্ছা জানান শরৎ। শেষপর্যন্ত নাছোড়বান্দা শরৎকে স্বামীজি দীক্ষা দিয়ে স্বামী সদানন্দ নাম দেন। সদানন্দ বলতেন, স্বামীজির চেয়ে বড় গুরু নেই। আমি তাঁর সারমেয়।

৫.উত্তরপ্রদেশের গাজিপুরে গিয়ে বিবেকানন্দ জানতে পারেন পোহারি বাবার কথা। তিনি সেখানে আশ্রয় নিয়ে যৎসামান্য খেতেন। তাঁকে মহাপুরুষ বলে মনে হয় স্বামীজির। সেকারণে চিঠি লেখেন প্রেমদাদাস মিত্রকে। চিঠিতে জানান, পোহারি বাবার দীক্ষা নিতে চান। দীক্ষা নেওয়ার আগের রাতে শ্রীরামকৃষ্ণ দুঃখ ভরা মুখে স্বপ্নে দেখা দেন। এরপরে পরপর ২১ দিন স্বামীজির স্বপ্নে একইরকম দুঃখ ভরা মুখে দেখা দেন শ্রীরামকৃষ্ণ। তারপর দীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত পাল্টে ফেলেন স্বামীজি।

৬.স্বামী অভেদানন্দের ভীষণ অসুস্থতার খবর শুনে স্বামীজি গাজিপুর থেকে বারাণসী ছুটে যান। পথে জানতে পারেন শ্রীরামকৃষ্ণের পরম সেবক বলরাম বসু প্রয়াত হয়েছেন। চোখের জল গড়িয়ে পড়ে স্বামীজির গালে। প্রেমদাদাস মিত্র বলেন, ‘সন্ন্যাসীকে কাঁদতে নেই’। যা শুনে স্বামীজি রেগে গিয়ে বলেন, ‘আমি এমন সন্ন্যাস মানি না যেখানে হৃদয় পাথরের মতো করে ফেলতে হবে।’

৭.মীরাটে থাকাকালীন লাইব্রেরি থেকে বই আনাতেন স্বামীজি। স্বামী অভেদানন্দ বইগুলি আনতেন। পড়ে পরেরদিনই ফেরত দিতেন স্বামীজি। একদিনে কীভাবে বই পড়া সম্ভব, তা নিয়ে লাইব্রেরিয়ানের সন্দেহ হয়। স্বামীজি লাইব্রেরিতে এলে, বই থেকে জিজ্ঞাসা করলেন লাইব্রেরিয়ান। কোন পাতায় কী লেখা রয়েছে প্রায় সবই সঠিকভাবে বলে দিলেন স্বামীজি। যা দেখে লাইব্রেরিয়ান বাকরুদ্ধ হয়ে যান।

৮.পিতা বিশ্বনাথ দত্তের প্রয়াণের পর স্বামীজির পরিবারের অবস্থা বেশ খারাপ হয়। খাবার জোটানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। স্বামীজি প্রায় প্রতিদিনই বলতেন, ‘বাইরে নিমন্ত্রণ রয়েছে।’ এই বলে বেরিয়ে যেতেন, যাতে খাবারের ভাগ বাকীরা বেশি পায়। নিজে প্রায় বেশিরভাগ দিনই অভুক্ত থাকতেন। তা নিয়ে গর্বও করতেন।

Post a Comment

0 Comments