‌তিনবার তিন ধর্মে বিয়ে করেছেন'‌, অমর্ত্য সেনকে ব্যক্তিগত আক্রমণ দিলীপের

 

কলকাতা: আবারও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে নিশানা করলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এবার দিলীপ ঘোষ ব্যক্তিগত আক্রমণ করলেন প্রবীণ এই অর্থনীতিবিদকে। মঙ্গলবার নিউটাউনের ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে অমর্ত্য সেনের প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘‘তিন বার তিন ধর্মে উনি বিয়ে করেছেন। তবে এটা ওঁর ব্যক্তিগত বিষয়। এব্যাপারে আমি কিছু বলব না।’’

বরাবরই তাঁর একাধিক মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক তৈরি হয়। এর আগেও অমর্ত্য সেনকে নিয়ে দিলীপ ঘোষের বেশ কয়েকটি মন্তব্যে সমালোচনার ঝড় উঠেছিল। নিন্দায় সরব হয়েছিলেন বুদ্ধিজীবীরা। মঙ্গলবারও অমর্ত্য সেনকে নিয়ে বিজেপি রাজ্য সভাপতির করা মন্তব্যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।


এদিন ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়েছিলেন দিলীপ ঘোষ। সেখানেই সাংবাদিকরা অমর্ত্য সেনের বাড়ি-বিতর্ক নিয়ে দিলীপ ঘোষকে প্রশ্ন করেন। উত্তরে এবার নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেন দিলীপ ঘোষ।


অমর্ত্য সেনের সমালোচনা করে এদিন তিনি বলেন, ‘‘‘তিন বার তিন ধর্মে উনি বিয়ে করেছেন। তবে এটা ওঁর ব্যক্তিগত বিষয়। এব্যাপারে আমি কিছু বলব না। দেশের মানুষের কথাই তো উনি ভাবেননি। দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন। ওঁর কথা যাঁরাই শুনেছেন তাঁরাই ডুবেছেন। আমরা ওঁর কথা শুনতে চাই না।’’


সম্প্রতি নোবেলজয়ী অর্থনীতিবদ অমর্ত্য সেনের বাড়ি-বিতর্ক নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। দিন কয়েক আগে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ দাবি করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের জমি দখল করে রেখেছেন অনেকেই, যে তালিকায় রয়েছেন অমর্ত্য সেনও। যা নিয়ে শুরু হয় জোর বিতর্ক।


মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিশ্বভারতীর এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন। এই ইস্যুতে কেন্দ্রের শাসকদলকে তুলোধনা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো। একইসঙ্গে অমর্ত্য সেনকে চিঠি লিখে তাঁর পাশে থাকার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী।


চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, ‘বিশ্বভারতীর কিছু নব্য হানাদার সম্প্রতি আপনার পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলতে শুরু করেছে। অনুগ্রহ করে এ দেশের আধিপত্যবাদ এবং অসহিষ্ণুতার বিরুদ্ধে লড়াইতে আমাকে আপনার বোন এবং বন্ধু হিসেবে গণ্য করুন’।


মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চিঠি পেয়ে খুশি হয়েছেন অমর্ত্য সেনও। তাঁর পাশে থাকার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাল্টা চিঠিতে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ।


অমর্ত্য সেন চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে লিখেছেন, ‘‘চিঠিতে আপনার সমর্থনের কথা জানতে পেরে আমি খুব খুশি। এটা শুধু আমাকে স্পর্শ করেনি, আমাকে আশ্বস্ত হয়েছি। আপনার ব্যস্ত জীবনের মধ্যেও আক্রান্ত মানুষের জন্য আপনি সময় বের করেছেন। আপনার শক্তিশালী কণ্ঠ, যা ঘটছে তা নিয়ে আপনার উপলব্ধি আমার কাছে শক্তির উৎসস্বরূপ।’’

Post a Comment

0 Comments