কচুয়ায় হিন্দু বাড়িতে হামলা ও প্রতিমা ভাংচুর,পরিদর্শনে জাগো হিন্দু পরিষদ।



রাজীব চন্দ্র শীল চাঁদপুর জেলার কচুয়া থানার ৫নং সহদেবপুর ইউনিয়নের জাগির গ্রামের হিন্দু বাড়িতে ১৭ ই অক্টোবর রোজ বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ৭ঘটিকার সময় হামলা ও লক্ষ্মী নারায়ণ মূর্তি ভাংচুর করেছে একদল দুর্বৃত্ত। সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন,জাগো হিন্দু পরিষদ কচুয়া শাখার সভাপতি সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী রাজীব চন্দ্র শীলের নেতৃত্বে শিপন সরকার,সুমন সরকারসহ একটি প্রতিনিধি দল। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়,১৫ ই অক্টোবর মঙ্গল বার লক্ষ্মীপূজা চলাকালীন পাশ্ববর্তী দক্ষিণ মতলব থানার টেমাইশিবপুর গ্রামের ২৫ থেকে ৩০ জনের একদল মুসলিম যুবক জাগির গ্রামের লক্ষ্মী পূজায় আসে।পূজায় তারা ডেকসেটে গান বাজিয়ে নাচার চেষ্টা করে।এতে পূজার দায়িত্বে থাকা গোপাল কৃষ্ণ ভৌমিক বলেন,আপনারা আমাদের পূজায় এসেছেন ভালো কথা,পূজা দেখেন কিন্তু এতজন লোক একসাথে নৃত্য করা যাবে না।প্রয়োজন হলে আপনারা ৫/৬ জন করে এক গ্রুপের পর আরেক গ্রুপ নৃত্য করেন। মুসলিম যুবকরা তাতে রাজি না হয়ে বলে আমরা একসাথে সবাই নৃত্য করবো।এতে উপস্থিত হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন আপত্তি জানায়।সাথে সাথে মুসলিম যুবকরা হই-হুল্লুড় শুরু করে দিয়ে অশ্লীল ভাষায় গালি গালাজ করতে থাকে এবং উপস্থিত কিছুলোককে ধাক্কা মেরে পালিয়ে যেতে থাকে এসময় উপস্থিত জনতা মাসুম মোল্লা নামক এক যুবককে আটক করে। মঙ্গলবার রাতেই মাসুম মোল্লার পিতা শুক্কুর মোল্লাকে ফোন করে ঘটনাস্থলে আসতে বলে।রাত আনুমানিক ২টায় শুক্কুর মোল্লা ৩-৪ জন লোক নিয়ে ঘটনাস্থলে আসে এবং বলে আমরা এর সুষ্ঠু সমাধান করবো এখন আপনারা আমার ছেলেকে ছেড়ে দিন। সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষে উপস্থিত হিন্দু জনতা মাসুম মোল্লাকে ছেড়ে দেয়। পরের দিন বুধবার জাগির গ্রামের বিপ্লব ভৌমিক চাকুরীর স্থল মতলবের নারায়ণপুর বাজারে যায়।সেখান থেকে বিকাল বেলা বাড়ি ফেরার পথে গোরাধারী হসপিটালের নিকট তাকে আটকিয়ে মারধর করে তার বাবা মাকে খবর দিয়ে বলে বৃহস্পতিবার সময় দিলাম।এর ভিতর তোদের লোকজনকে বলবি আমাদেরকে সেদিন যে অপমান করেছে তার যেন বিচার করে। বাড়িতে এসে বিপ্লব ভৌমিকের বাবা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে সাথে নিয়ে ৫নং সহদেবপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মোবারক মেম্বারকে ঘটনার বিস্তারিত জানায়।সাথে সাথে মোবারক মেম্বার দক্ষিণ মতলবের টেমাই শিবপুর ওয়ার্ড মেম্বার জসিম খানকে বিষয়টি জানায় এবং উভয়পক্ষকে বসিয়ে রবিবারের ভিতর মীমাংসা করার জন্য দিন ধার্য্য করে।এতে টেমাই শিবপুরের ঐ সংঘবদ্ধ যুবকরা এতসময় দেওয়া যাবে না বলে আপত্তি জানায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা আনুমানিক ৬.৩০মিনিটের দিকে ২০/২৫ জনের একদল যুবক জাগির গ্রামের বাজারে আসে তারা সেখানে জাগির গ্রামের সাগর সরকারের উপর হামলা করে।সাগর সরকারের ডাক চিৎকারে আশে পাশের লোকজন ছুটে আসে এতে হামলাকারীরা সেখান থেকে চলে গিয়ে হিন্দু বাড়ির দিকে রওনা হয়।এসময় স্থানীয় জনতা বাজারে ফয়সাল নামক এক যুবককে আটক করে।২০/২৫ জনের গ্রুপটি হিন্দু বাড়িতে প্রবেশ করে সঞ্জিত,শুকুমার ও রঞ্জিত ভৌমিকের ঘরের বেড়া ও পিড়া লাঠি-সোঠা দিয়ে ভাংচুর করতে করতে লক্ষ্মী নারায়ণের মন্দিরে এসে লক্ষ্মী নারায়ণের মূর্তি মন্দির থেকে বের করে এনে ভাংচুর করে এবং মন্দিরের বেড়া লাঠিসোঁটা দিয়ে আঘাত করে দ্রুত পালিয়ে যায়। হিন্দু সম্প্রদায়ের মহিলারা আতংকে ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে পুরুষদেরকে ফোন করে।ফোন পেয়ে তারা বাড়িতে এসে দেখে হামলাকারীরা পালিয়ে গেছে।তারা সাথে সাথে পুলিশ প্রসাশনকে ফোন করে বিস্তারিত জানায়।পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আলামত জব্দ করে উপস্থিত সবাইকে আস্বস্ত করে বলেন, এই ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে এবং আটক ফয়সালকে থানায় নিয়ে যায়। পরের দিন শুক্রবার চাঁদপুর পুলিশ সুপারসহ কচুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শেখ রাসেল,কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালী উল্লাহ,মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ ঘটনারস্থলে আসে।পুলিশ সুপার সবাইকে আতংকিত না হওয়ার জন্য বলেন এবং যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে হিন্দু সম্প্রদায়কে আস্বস্ত করেন। দিলীপ ভৌমিক বাদী হয়ে কচুয়া থানায় ১০ জনকে আাসামী ও অজ্ঞাত নামা ৭/৮ জনকে এজাহার ভুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একব্যাক্তি বলেন,আমরা এই হামলার স্বীকার হতাম না কিন্তু আমাদের গ্রামের মানিক সরকার ওরফে পিচ্চি মানিক হামলা কারীদেরকে ইন্ধন যুগিয়েছিল। এই ব্যাপারে,মানিকের মোবাইল নাম্বারে কল দিয়ে তার জড়িত থাকার বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে,সে প্রতিবেদককে বলে,আমি এই ঘটনার সাথে জড়িত নই,তারা আমার নামে মিথ্যা কথা বলছে।

Post a Comment

0 Comments