“শ্রীনামের মহিমা” হরের্নাম হরের্নাম হরের্নামৈব কেবলম কলৌ নাস্ত্যেব নাস্তেব নাস্ত্যেব গতির্ন্যথা।।



শ্রী সুজিত চৌধুরী কলি যুগে নাম বিনে আর গতি নাই, নাই মুক্তি, নাই প্রাপ্তি শ্রদ্ধা-ভক্তি। বর্তমানে সকলে যজ্ঞের শ্রেষ্ঠ যজ্ঞ হচ্ছে নাম যজ্ঞ। “যেই নাম সেই কৃষ্ণ ভজ নিষ্ঠা করি, নামের সহিত আছেন আপনি শ্রীহরি।। এ নামের মধ্যেই বিরাজমান সকল শক্তি ও শ্রদ্ধা ভক্তি। পরম দয়াল শ্রী রাম ঠাকুর বেদ বাণী-১/৭ পত্রাংশে বলেছেন- “ভগবানের নাম আর রূপ একই বস্তু জানিয়া কেবল নাম নিয়া পড়িয়া থাকিবেন” (বীজের মধ্যে যেমন বৃক্ষ অবস্থিত কিন্তু চোখে দেখা যায় না, তেমনি নামের মধ্যে ভগবানের রূপটি লুকায়িত আছে)। সনাতনী সম্প্রদায়ের এক একটি সম্প্রদায়ের গুরু এক এক জন। যিনি যে গুরর আশ্রিত তার কাছে তার গুরু শ্রেষ্ঠ। “মন্নাথঃ শ্রী জগন্নাথো মদ গুরু শ্রী জগৎ গুরু, মমাত্মা সর্ব ভ‚তাত্মা তন্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ।। আমার নাথই জগতের নাথ, আমার গুরুই জগতের গুরু, সেই জগত গুরুই পারে ভক্তকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে। আমাদের গুরু পরম দয়াল শ্রী শ্রী রাম ঠাকুর জীবের উদ্ধার কল্পে প্রচ্ছন্নভাবে এ ঘোর কলি যুগে অতি সাধারণ মানুষের ন্যায় লোকের দ্বারে দ্বারে অকাতরে বীজ মন্ত্রের চেয়েও শক্তিশালী ছয় অক্ষরযুক্ত মহামন্ত্র “শ্রীনাম” বিলিয়ে গেছেন। বেদবানী- ২/৬৫ তে ঠাকুর বলেছেন- “অদৃষ্টে যেমন যেমন হইবে তাহাকে ছাড়াইতে পারে? ভগবান কাহারও অদৃষ্টের ভোগ নষ্ট করিতে পারে না, এক নামেই পারে”।। তাই নামের মহিমার কাহিনী নি¤œরূপ ঃ অপুত্রক হওয়ার কারণে বিশাল সা¤্রাজ্যের অধিশ্বর এক রাজার মনে কোন শান্তি নাই। অনেক দান ধ্যান করে ঠাকুরের কৃপাতে রাজার একটি পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করল। কিন্তু রাজ আর্চায্যের গণনায় পুত্রের বয়স মাত্র এক বৎসর। তা জেনে মহারাজ এই বিধান কল্পে সাধু সম্মেলনের আয়োজন করার আদেশ দিলেন। ছেলের এক বৎসর পরমায়ুর জন্য কেউ বিধান দিলেন- শান্তি স্বস্ত্যয়নের, কেউ বা যজ্ঞানুষ্ঠানের। কিন্তু রাজার জিজ্ঞাসা, এতে কি যুবরাজের পরমায়ু বাড়বে? সকলেই নিশ্চুপ। তখন এক বৃদ্ধ দাঁড়িয়ে বলবেন- “আমি মুনি ও না ঋষিও না, তবে যুবরাজের জন্য শুধু হরিনাম যজ্ঞের ব্যবস্থা করতে বলছি, যুবরাজের পরমায়ু শেষ হবার ছয়দিন পূর্বে এবং পরমায়ু শেষ হবার একদিন পরে সহ সাতদিন সাতরাত অবিশ্রান্ত ভাবে হরিনাম কীর্ত্তন হবে। কীর্ত্তন আরম্ভের পূর্বে যুবরাজকে নিয়ে মহারাণী কীর্ত্তন আসরের মধ্যস্থলে থাকবেন, কোন অবস্থাতেই কীর্ত্তন আসরের বাইরে আসতে পারবেন না, একমাত্র নামের শক্তিতে যুবরাজের পরমায়ু বাড়তে পারে। তাছাড়া পৃথিবীর আর কারও শক্তি নেই। সেই বৃদ্ধের কথামত যথা নিয়মে হরিনাম সংকীর্ত্তন আরম্ভ হল। সাত দিন সাত রাত পার হয়ে হরিনাম যজ্ঞ সমাপ্ত হল। ওদিকে যথাস্থানে নারায়ণ বসে আছেন। আছেন বৃহ্মা, মহেশ্বর। এমন সময় যমরাজ বললেন কীর্ত্তনে বিভোর হয়ে আমি আমার কর্তব্য পালন করতে পারিনি। যুবরাজকে নেওয়া হয়নি। গত এক দিন আগে যুবরাজের আয়ু শেষ হয়ে গেছে। যমরাজের বিষন্ন বদন দেখে নারায়ণ যমরাজের কাছে পরমায়ুর খাতটি চেয়ে নিলেন। এদিকে এই সাতদিন ধরে নারায়ণ ও তো কীর্ত্তনের আন্দন্দে বিভাগের ছিলেন। তাঁর চোখের কাজলের সঙ্গে অষ্ট স্বাত্তিক ভাবের লক্ষণ অশ্রæ ও ঘর্ম মিশে ছিল। তিনি যখন পরমায়ুর খাতাটি দেখছিলেন, তখন কোন ফাঁকে ঐ ছেলের নামের পাশে যেখানে ১(এক) লেখা ছিল তার পাশে কাজলের একটি বিন্দু পড়ে গেল, নারায়ণ সেটি লক্ষ করেননি। সুতরাং বিন্দু যুক্ত হয়ে ১(এক) টি ১০(দশ) এ পরিণত হলো। ধর্মরাজ আপনি বলেছেন ১ বৎসর, কিন্তু আমি দেখছি ১০ (দশ) বৎসর। ব্রহ্মা এবার খাতাটি হাতে নিয়ে ১০ এর পাশে আর একটি বিন্দু দিলেন। এবার যুবরাজের পরমায়ু হয়ে গেল ১০০ বৎসর। মহেশ্বর বললেন “আমি একটু দেখি, তিনি খাতাটি হাতে নিয়ে ১০০ এর পাশে আর একটি বিন্দু বসিয়ে দিরেন। এবার যুবরাজের পরমায়ু হয়ে গেল ১০০০ বৎসর। ধর্মরাজ ভাবলেন সকেলই যখন পরমায়ু বাড়ালেন তখন আমিই বাদ যাব কেন? তিনি এবার আর একটি বিন্দু বসালেন, যার ফলে যুবরাজের পরমায়ু হয়ে গেল ১০,০০০ বৎসর। তাহলে দেখা যাচ্ছে নামের অসীম ক্ষমতা। নামের জোরে অদৃষ্ট লিপিও খন্ড হয়ে যায়। বেদ বাণী- ১/৩৬৬ এ রাম ঠাকুর ও বলেছেন- “হরির নাম রাখিলে, নিত্য হরির নাম করিতে করিতে সকল ব্যারামই সারিতে দেখা যায়।” সকল ভক্তের প্রতি ঠাকুরের আশ্বাস বাণী “আগে নাম, মধ্যে আপনি, পিছনে দেখেন আর নাই দেখেন আমি কিন্তু আছি”। “ওঁ নমঃ শ্রী রাম চন্দ্রায় মৃদু মধুর বাষিণে। সৌম্য শান্তাবতারাম তন্মৈ শ্রী গুরুবে নমঃ।। জয় রাম * জয় রাম * জয় রাম শ্রী সুজিত চৌধুরী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বরলিয়া গীতিা শিক্ষা নিকেতন,

Post a Comment

0 Comments