বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে ৯টায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে অ্যাম্বুলেন্সগুলো বেনাপোল বন্দরের চ্যাসিজ টার্মিনালে নিয়ে আসা হয়। এর আগে গত ২১ মার্চ প্রথম চালানে ১টি ও পরে ৭ আগস্ট দ্বিতীয় চালানে ৩০টি অ্যাম্বুলেন্স আসে। এ নিয়ে তিনটি চালানে ৭১টি অ্যাম্বুলেন্স আসলো দেশে।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, প্রতিবেশি দেশ ভারতের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্যের পাশাপাশি রয়েছে বন্ধুত্ব ও সৌহার্দ্যের সম্পর্ক। এরই সূত্র ধরে বিভিন্ন দুর্যোগকালে বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। বন্ধুত্বের জানান দিতে বাংলাদেশও ক্ষুদ্র রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের পাশে থাকছে সাধ্যমতো। ভারতের রপ্তানি বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় কেন্দ্র বাংলাদেশ। ভ্রমণ আর চিকিৎসা সেবায় প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকেও লাখ লাখ মানুষ যায় ভারতে। ভারতে কোন দুর্যোগ হলে সহজে তার প্রভাব পড়ে বাংলাদেশে। তেমনি বাংলাদেশে কোন অশান্তি হলে তার ছোঁয়া লাগে ভারতে।
তিনি জানান, চলমান করোনায় যেমন বাণিজ্য খাতে তেমনি ভ্রমণ খাতে ধস নামে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী চলতি বছরের ২৬ ও ২৭ মার্চ দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশ আসেন। এ সময় দেশের স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়ন আর চলমান করোনা পরিস্থিতি যৌথ মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ১০৯টি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স উপহারের ঘোষণা দেয়া হয়।
অ্যাম্বুলেন্স আমদানিকারকের প্রতিনিধি মেহেদী হাসান জানান, অ্যাম্বুলেন্সের আমদানিকারক ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার। বন্দর থেকে ছাড় করাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা সম্পূর্ণ করছেন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট জেড আর করপোরেশন। গত ২১ মার্চ একটি অ্যাম্বুলেন্স আসে বাংলাদেশে। পরে ৭ আগস্ট দ্বিতীয় চালানে আসে ৩০টি। তৃতীয় চালানে প্রবেশ করলো ৪০টি। এ নিয়ে তিন চালানে আসলো ৭১টি অ্যাম্বুলেন্স। আগামী মাসে বাকি অ্যাম্বুলেন্স ঢুকবে দেশে।
ভারতের পেট্রাপোল সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চন্দ্র বলেন, ভারতে করোনা যখন মহামারি অবস্থা, তখন বাংলাদেশ সরকার ওষুধ দিয়ে সাহায্য করেছে। ভারতও অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়েছে। এমন সম্পর্ক আগামীতে বাণিজ্য ও বন্ধুত্বকে আরও জোরদার করবে।
বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান জানান, উপহারের অ্যাম্বুলেন্স শুল্কমুক্ত সুবিধায় কাস্টমস থেকে খালাস দেওয়া হচ্ছে। দ্রুত যাতে ছাড় হয় সেজন্য বিশেষ টিম গুরুত্ব সহকারে কাজ করছে।
বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক মামুন কবীর তরফদার বলেন, বেনাপোল বন্দর ও কাস্টমসের আনুষ্ঠানিকতা শেষে অ্যাম্বুলেন্স নেওয়া হবে ঢাকাতে। পরে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় দূতাবাস কর্মকর্তারা সরকারের প্রতিনিধিদের হাতে উপহার তুলে দেবেন।
জানা যায়, দুই দিনের সরকারি সফরে গত ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আসেন ঢাকা সফরে। এসময় তিনি স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নের জন্য বিশেষ করে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবিলার যৌথ প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ সরকারকে ১০৯টি লাইফ সাপোর্ট অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এরপর গত ২১ মার্চ প্রথম চালানে একটি, দ্বিতীয় চালানে ৩০টি, তৃতীয় চালানে ৪০টি অ্যাম্বুলেন্স আসলো দেশে।
0 Comments