হিন্দু পারিবারিক আইন পরিবর্তন প্রচেষ্টার প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জে ঝাড়ু মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত


 

বিজয় চন্দ্র সরকার জেলা প্রতিনিধি কিশোরগঞ্জ। হিন্দু শাস্ত্রীয় পারিবারিক আইন পরিবর্তন প্রচেষ্টার প্রতিবাদে কিশোরগঞ্জ কালিবাড়ি মোড়ে আজ শুক্রবার সকালে জেলা হিন্দু ছাত্র মহাজোট ও যুব মহাজোট কতৃক আয়োজিত মানববন্ধন ও ঝাড়ু মিছিল হয়। উক্ত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলে সভাপতিত্ব করেন জেলা যুব মহাজোট এর সভাপতি শ্রী বিদ্যুত আচার্য শশী, জেলা হিন্দু ছাত্র মহাজোট এর সাধারণ সম্পাদক শ্রী উৎফল ভৌমিক অর্থ এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ছাত্র মহাজোটের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্রী মৃন্ময় দে সাগর, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী নিলয় পাল আদর,

 

জেলা মাইনরিটি ওয়াচ এর সভাপতি শ্রী বিজয় সরকার, জেলা যুব মহাজোট এর নির্বাহী সভাপতি শ্রী মানিক সরকার, সিনিয়র সহ-সভাপতি এড. দোলন আচার্য, সাধারণ সম্পাদক শ্রী কাজল দাস, সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী রিপন সূত্রধর, জেলা ছাত্র মহাজোট এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্রী শান্ত সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক অমিত রায় রাহুল, কাজল সরকার, সাগর সূত্রধর, কোষাধ্যক্ষ রতেন্দ্র সরকার সহ আরো জেলা/উপজেলা কমিটি বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ ও সনাতনী সমাজের প্রতিনিধিরা।

বক্তাগণ বলেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনসহ কয়েকটি এনজিও হাজার হাজার বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে চলে আসা সুসংহত হিন্দু বিধি বিধান নষ্ট করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে ঘরে দল সংঘাত ও অশান্তির বীজ বপন করছে। তারা সুপ্রতিষ্ঠিত ও শান্তিপূর্ণ হিন্দু পরিবার ব্যবস্থা ধ্বংস করে বাংলাদেশকে হিন্দু শুন্য করার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে। তাদের দুরভিসন্ধি হাসিলে হিন্দু আইনের খসড়া তৈরী করে আইন কমিশনে জমা দিয়েছিল। সেখানে ব্যর্থ হয়ে এখন মহামান্য হাইকোর্টে রীট দায়ের করেছে। যার নেতৃত্বে আছেন আইন ও শালিশ কেন্দ্র সহ বেশ কয়েকটি এনজিও। তারা হিন্দু পারিবারিক সম্পত্তি বিভাজন করে ব্যক্তি কেন্দ্রীক সম্পত্তি বন্টন, বিবাহ বিচ্ছেদ, হিন্দু বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন বাধ্যতামূলক ও শাস্তির বিধান, দত্তক, ভরন পোষনসহ বিভিন্ন বিষয়ে হিন্দু ধর্ম শাস্ত্রীয় পবিত্র বিধি বিধান পরিবর্তনের চক্রান্ত করছে।

তারা এটা বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিভেদ ও বিদ্বেষ ছড়িয়ে হিন্দু সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এনজিওরা দেশের বিভিন্ন স্থানে সভা-সেমিনার করে হিন্দু বিধিবিধান সম্পর্কে মিথ্যা, কাল্পনিক ও বিদ্বেষমূলক তথ্য দিয়ে হিন্দু জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে হিন্দুদের প্রতিটি পরিবারে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘৃন্য অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে। তথাকথিত সুশীল সমাজ ও এনজিওকর্মীরা হিন্দু আইনে তালাক ব্যবস্থা সংযুক্ত করার প্রস্তাব জমা দিয়েছে। তারা হিন্দু বিবাহের মূল ভিত্তি নষ্ট করতে তৎপর। এনজিওদের চাপাচাপির কারনে সরকার অপসোনাল বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা চালু করেছে।

সেই রেজিষ্টেশনও হচ্ছে মুসলিম বিবাহ রেজিষ্টারে। মুসলিম বিবাহ রেজিষ্টারে রেজিস্ট্রিকৃত খুলনার শ্রীবাস সাহা আবার সেই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করেছে। অর্থাৎ বাধ্যতামূলকভাবে হিন্দুদের ঘাড়ে মুসলিম বিধি বিধান চাপিয়ে দিচ্ছে। অতএব তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদ যে নামেই হোক না কেন কোনটাই হিন্দু সমাজ মেনে নেবে না। বক্তাগণ আরো বলেন, সামান্য কিছু অনৈতিক ও বিকৃত রুচির এনজিও কর্মীর জন্য কোটি কোটি জনগণকে চরম ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে দেয়া যাবে না। গুটিকয়েক পাশ্চাত্য চিন্তা চেতনার অসুস্থ মস্তিষ্ক ও বিকৃত রুচির হৃদয়হীন নর নারীর কারনে লক্ষ লক্ষ নারী ও শিশুর জীবন বিপন্ন হতে দেওয়া যায় না। এনজিওদের কারনে দেশে আজ লক্ষ লক্ষ পথ শিশু। পৈত্রিক সম্পত্তি বিষয়ে হিন্দু বিধি বিধানে কোন বৈষম্য না থাকা সত্ত্বেও তারা নানাভাবে অপপ্রচার চালিয়ে হিন্দু সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। নারীরা পরিবারের বাইরে বিচ্ছন্ন কোন দ্বীপের অধিবাসী না। প্রত্যেক নারী কোন না কোন পরিবারের সদস্য।

হিন্দু নারীর শিক্ষাজীবন কাটে পিতার বাড়ীতে। কিন্তু সমগ্র জীবন স্থায়ীভাবে বাস করতে হয় স্বামীর বাড়ী তথা স্বামীর অর্ধাঙ্গিনী হিসেবে নিজের বাড়ীতে। কোন নারী পিতার সম্পত্তি দাবী করলে তার ননদও তার স্বামীর সম্পত্তি টানাটানি করবে। ফলে নারীর স্থায়ী আবাস এর শান্তি ও স্থায়িত্ব নষ্ট হবে। এনজিওরা সেটাই চায়। তারা চায় উভয় পরিবারে কলহ, বিবাদ বিসম্বাদ, মামলা মোকদ্দমায় জড়িয়ে নারীরা যাতে করে রাস্থায় পড়ে। সেটা নিয়ে তাদের ব্যবসা সম্প্রসারন করতে চায়।

Post a Comment

0 Comments