দাদা বনাম দিদির লড়াই, অমিত শাহের মাস্টার স্ট্রোক!

Sourav Ganguly amit Shah and Mamata Banerjee

ওয়েবডেস্ক: ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেট অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিসিআইয়ের সভাপতিপদে বসার ছাড়পত্র আদায় করে নিয়েছেন। সৌরভই এখন থেকে ভারতের ক্রিকেট পরিচালনা করবেন। তবে এই বিষয়টিকে বিজেপি সভাপতি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের একটি রাজনৈতিক পদক্ষেপ হিসাবেই দেখছে ওয়াকিবহাল মহল।

একটি অংশের দাবি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে বিজেপির ‘চ্যালেঞ্জার’ হিসাবে সৌরভকেই এগিয়ে দিতে চান অমিত। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের আগে অমিতের এই পদক্ষেপ নিয়েই শোরগোল পড়ে গিয়েছে জাতীয় স্তরের রাজনীতিতেও।


জানা গিয়েছিল, গত সপ্তাহেই সৌরভের সঙ্গে তাঁর দিল্লির বাড়িতে অমিত একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেছিলেন। এর পরই তিনি তাঁর ‘ট্রাবল শ্যুটার’, অসমের নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে ডেকে মুম্বই যেতে বলেন। কারণ অনেক আগে থেকেই অমিত পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা যুদ্ধে তাঁর “দাদা বনাম দিদি” কৌশলটির কার্যকারিতা সম্পর্কে যথেষ্ট নিশ্চিত।

শর্মা রবিবার গভীর রাত পর্যন্ত ফোনাফুনির কাজে ব্যস্ত থাকেন। একই সঙ্গে তিনি নিশ্চিত করেন, অন্য সমস্ত প্রার্থী বিসিসিআইয়ের “নির্বাচন” থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। অমিতের ছেলে জয় শাহ বিসিসিআইয়ের সচিব হয়েছেন এবং কোষাধ্যক্ষ হয়েছেন অরুণ ধুমাল। ধূমাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের ভাই।

২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন হওয়ার কথা। এখনও পর্যন্ত বাংলার ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (সিএবি) সভাপতি সৌরভকে শুধুমাত্র কেন্দ্রের মোদী সরকারের “স্বচ্ছ ভারত” মিশনের অঙ্গ হিসাবেই দেখা গিয়েছে। গত সপ্তাহে অমিতের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়েছিল তা স্বীকার করেও সৌরভ কোনও রাজনৈতিক যোগাযোগের কথা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। মজার বিষয় হচ্ছে, বিসিসিআইয়ে সৌরভের মাত্র ১০ মাসের মেয়াদ থাকবে । যার পরেই শুরু হওয়ার কথা নতুন একটি অধ্যায়ের। সে সময়ই শুরু হওয়ার কথা পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারকাজের।

অমিতের সঙ্গে সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে বিতর্কের বল অবশ্য সোজা মাঠের বাইরে পাঠানোর চেষ্টা করেছেন ‘বাংলার মহারাজ’। তিনি জানিয়েছিলেন, “অমিত শাহের সঙ্গে এই প্রথমবার আমার দেখা হল। তবে ওঁকে একবারও প্রশ্ন করিনি যে, বিসিসিআইয়ের কোন পদ আমি পেতে চলেছি। কোনো রাজনৈতিক বিষয় নেই এর মধ্যে”।
ভারত অধিনায়ক হিসাবে ক্রিকেট ক্রিজে বাঙালির হৃদয় জিতেছেন সৌরভ। রীতিমতো বাঙালির আবেগের অনুষঙ্গ হয়ে উঠেছেন তিনি। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এ বার রাজনীতির ময়দানে তাঁকে টেনে নামানোর অর্ধেক কাজটাই সেরে ফেললেন অমিত। বিজেপির একটি সূত্র এমনটাও বলছে, আরও এক প্রাক্তন ভারত ক্রিকেট অধিনায়কের সঙ্গে সমানে রাজনৈতিক কথোপকথন জারি রেখেছে দল। আদতে অমিত তাঁর নিজের দায়িত্বে সমানে পালন করে চলেছেন!



যদিও সৌরভের সঙ্গে সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে অমিত তখনই জানিয়েছেন, “সৌরভ আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। আমি দীর্ঘ দিন ধরে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত। তাই বলে আমি স্থির করিনি, কে বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হবেন। বিসিসিআইয়ের নির্দিষ্ট নির্বাচন পদ্ধতি রয়েছে। সৌরভের সঙ্গে আমার দেখা করার আর অন্য কোনো কারণ নেই”।

Post a Comment

0 Comments