গোলাপগঞ্জের জায়গায় সংক্রান্ত বিরোধে মন্দিরের পুরোহিত কে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার এর অভিযোগ !



গোলাপগঞ্জের বাঘায় মন্দিরে তরুণীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মন্দিরের সেবায়েতকে গ্রেফতার করেছে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। বুধবার রাতে উপজেলার বাঘা ইউপি’র কালাকোনা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এদিকে মন্দিরের সেবায়েতকে আটকের খবরে বাঘা তথা গোটা উপজেলায় ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন থেকে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে একটি শ্রেণীর সাজানো নাটকের প্রতিফলন এটি। মন্দিরের সেবায়েতের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন ও বিরোধ পূর্ণ ঐ জায়গার দখল নেয়ার চেষ্ঠা করছে।


স্থানীয় লিংকন দেব জানান, উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের কালাকোনা গ্রামে শ্রী শ্রী গিরিধারী জিও মন্দিরের নামে নিজস্ব অর্থে জায়গা ক্রয় করে সেবায়েত হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন টাংগাইল জেলার দেলদোহার থানার সিলিমপুর গ্রামের কালু চৌহান এর পুত্র প্রাণ গোবিন্দ দাস বাবাজি (৪৬)। কিন্তু মন্দির প্রতিষ্ঠার পর দায়িত্ব গ্রহণ থেকেই পার্শ্ববর্তী হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি পরিবার এর বিরোধিতা করে আসছে। তাদের দাবী এখানে যেহেতু একটি কালাচাঁদ মন্দির রয়েছে, সেখানে বিরোধ পূর্ণ স্থানে আরেকটি গিরিধারী মন্দির নির্মাণ সমাজে বিভেদ সৃষ্টির কারণ হবে। তাছাড়া ঐ পরিবার প্রায়ই মন্দিরে নানা কাজ উৎপাত করে আসছিল বলে অনেকের অভিযোগ।

‘সিলেটের কাগজে”র গোপন অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আরেক তথ্য। অনেকেই বলছেন সরকার দলীয় এক নেতার আঙ্গুলের ইশারায় এমনটা হচ্ছে। তবে কে সেই ক্ষমতাধর ব্যক্তি এ বিষয়ে কেউই মুখ খুলতে রাজি হননি।
জানা যায় ২০১৯ সালের ২৩ আগস্ট মন্দিরের নির্মাণ কাজে বাধা প্রদান সহ ২লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে স্থানীয় ঋষিময় দেব সহ তার পরিবারের লোকজন। অন্যথায় নারী নির্যাতন মামলা ও প্রাণে হত্যার হুমকীও দেয়। পরে একই বছরের ২২ ডিসেম্বর পুনরায় মন্দিরে ঢুকে চাঁদা দাবী করেন এমনকি তখন শারিরীক নির্যাতনের শিকার হন ওই সেবায়েত। এ ঘটনায় মন্দিরের সেবায়েত গোবিন্দ দাস বাদী হয়ে মামলা দায়ের করলে সেই মামলার তদন্তভার প্রথমে পুলিশ ও পরে সিআইডিকে দেওয়া হলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়। এ বিষয়ে সিআইডি কর্মকর্তা মুখলেসুর রহমান জানান, আগের দায়েরকৃত মামলার তদন্ত আমি করেছি। পুরো ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদনও দাখিল করা হয়েছে।

 পূর্বের ঘটনায় মন্দিরের সেবায়েতেরে সাথে যে খারাপ আচরণ ও মারধর করা হয়েছে তার সতত্যাও মিলেছে।অপরদিকে, মন্দিরের সেবায়েত নিজের ও মন্দিরের নিরাপত্তা চিন্তা করে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করায় ভিন্ন কৌশলের আশ্রয় নেয় প্রতিপক্ষ। তারা তাকে এখান থেকে হঠাতে এবং মন্দিরের ভূমিদাতাকে দেখে নেওয়ার হুমকীও দেয়। এরই জের স্বরুপ সেবায়েতকে ফাঁসানো হয়েছে বলে স্থানীয়দের ধারনা।

এদিকে গত বুধবার পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে ঋষিময় দেবের মেয়ে পুষ্পিতা দেব পুষ্প সেবায়েত ও অপর একজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ এনে একটি মামলা দায়ের করেন। (মামলা নং-১২/ ১৪-০৪-২০২১ইং) সেই দায়েরকৃত মামলার ভিত্তিতে মন্দিরের সেবায়েতকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঘা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি সাইয়্যাদ আহমদ সুহেদ জানান, মন্দিরের বিষয় নিয়ে অনেক আগে থেকেই ঝামেলা চলছিল। এ বিষটি একাধিকবার আমি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়েছি। একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিয়ে এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান তিনি এবং যে-ই অন্যায়কারী সাব্যস্থ হোন দ্রুত শাস্তির দাবীও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ হারুনূর রশীদ চৌধুরী গ্রেফতারের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, অন্যজনকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।


তথ্য সূত্রঃ সিলেটের কাগজ

Post a Comment

0 Comments